অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া ২০২৪

বর্তমান বাংলাদেশ যারা ব্যবসায়ী রয়েছে তারা অধিকাংশ খুচরা ব্যবসার করছে তাই খুচরা ব্যবসার প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এজন্য, এখন পাইকারি ব্যবসার প্রতিযোগিতা অনেক কম। আপনি যদি ব্যবসা করতে চান তাহলে পাইকারি ব্যবসা শুরু করুন। আপনারা যারা অল্প টাকার মধ্যে একটি পাইকারি ব্যবসা করতে যাচ্ছেন তাদের জন্যে আজকের এই পোষ্টটি অনেক উপকারে আসবে।
অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া
আজকে আমরা আপনাদের সুবিধার্থে ২০২৪ সালে অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আপনি যদি পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে চান বা ভবিষ্যতে পাইকারি ব্যবসা শুরু করবেন বলে ভেবেছেন তাহলে অবহেলা না করে আমাদের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি একেবারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আশা করছি, উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

একটা সময় ছিল অধিকাংশ মানুষ লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা চাকরির স্বপ্নে বহাল থাকতো। একটি চাকরি যতই ভালো হোক না কেন চাকরি শব্দের উৎপত্তি চাকর শব্দ থেকেই। ইতিহাসে ওরা অনেক ধনী ব্যক্তিদের কথা শুনেছি তাদের মধ্যে চাকরিজীবী কয়জনই বা ছিল? আপনি একটা ব্যবসার মধ্যে যতটুকু স্বাধীনতা পাবেন, আপনি চাকরির ক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা পাবেন না।

কয়েকজন মনে মনে ভাবতে পারেন যে ব্যবসায়ের মধ্যে অনেক ঝুকি এবং জটিলতা থাকে আর সফল হওয়াটাও বেশ কষ্টকর। জি ভাই ব্যবসায় ঝুঁকি রয়েছে কত্রহায় আছে না "যেখানে ঝুঁকি নেই সেখানে কোনো লাভ নেই" সুতরাং আপনি যদি ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই ঝুঁকি নিতে হবে এটাই সত্য। তবে শুধু ঝুঁকি নিলেই যে সফলতা পাবেন সেটিও কিন্তু ভুল ধারণা।

একটি ব্যবসায়ী সফলতা না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পন্য সঠিকভাবে নির্ধারণ না করা এবং ব্যবসার ধরন না জানা। আজকে আপনাদের জানাবো পাইকারি ব্যবসা কি, আপনি কেন পাইকারি ব্যবসা করবেন, ২০২৪ সালে অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া এবং পাইকারি ব্যাবসা কি সবার করা উচিত? এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পাইকারি ব্যবসা কি - What is wholesale business

এখন চলুন, প্রথমে পাইকারি ব্যবসা কি সেই সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেই। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার প্রকারভেদ রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে পাইকারি ব্যবসা। আর এই পাইকারি ব্যবসা হচ্ছে ব্যবসায়ী সরাসরি মূল উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য কিনে সেই পন্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে বা খুচরা বিক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়। একটি উদাহরণ দিয়ে বললে আরো ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।

ধরুন, আপনি কসমেটিক্সের পাইকারি ব্যবসা করবেন তাহলে আপনি সরাসরি কসমেটিক্স উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে আসবেন এবং সেই কসমেটিক্সগুলো আপনি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করবেন। বেশিরভাগ খুচরা বিক্রেতারা সরাসরি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পণ্য নিতে পারে না কারণ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বেশি সংখ্যক পণ্য নিতে হয়।

এজন্য, খুচরা ব্যবসায়ীরা সরাসরি পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নেয়। এটিই পাইকারি ব্যবসার আসল ধারনা। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন, আপনি কেন পাইকারি ব্যবসা করবেন? সেই সম্পর্কে জেনে নিই।

আপনি কেন পাইকারি ব্যবসা করবেন?

আমাদের মধ্যে অনেকেই গুগলে সার্চ করে জানতে চাই যে আমি কেন পাইকারি ব্যবসা করব? এই প্রশ্নটা মনের ভেতরে জাগাটা খুবই স্বাভাবিক যে এতসব ব্যবসা থাকে আপনি কেন পাইকারি ব্যবসা করবেন না? আসুন আমরা তাহলে সেই কারণটা জেনে নেই। বর্তমান বাজারে যেমন ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেড়েছে তেমনি প্রতিযোগিতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে আপনি একটু খেয়াল করলে দেখবেন প্রায় বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসা করছে। যেমন, যারা অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসা করছে এটি মূলত খুচরা ব্যবসার মধ্যেই বিরাজমান। আবার খুচরা ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে মানে খোঁচা ব্যবসার প্রতিযোগিত বাড়ছে। এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীর পরিমাণ বেড়ে যাওয়া মানে পাইকারি ব্যবসার চাহিদা বেড়ে যাওয়া।

এছাড়াও পাইকারি ব্যবসা বর্তমানে অনেক লাভজনক ব্যবসা। চলুন, তাহলে আপনি কেন পাইকারি ব্যবসা করবেন তার আরো কিছু কারণ জেনে নেই।
  • বিশাল লাভ (Huge Profit)
  • স্থায়ী গ্রাহক (Parmanent Customer)
  • মৌসুমী লাভ (Seasonal Profit)

কত টাকা দিয়ে পাইকারী ব্যবসা শুরু করা যায়?

কত টাকা দিয়ে পাইকারী ব্যবসা শুরু করা যায়? এই বিষয়েও জেনে নেওয়া জরুরি। আমরা প্রথমেই বলেছি পাইকারি ব্যবসায়ী প্রচুর লাভ থাকে। সুতরাং আপনাকে বেশি লাভ করতে হলে বিনিয়োগের (Investment) পরিমাণও বেশি হতে হবে। কেননা, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কিনতে হবে তারপর আবার সেই পন্যকে সঠিকভাবে স্টোর করতে হবে এগুলোর পেছনে বেশ খরচ রয়েছে।

আপনার যদি অল্প পুজি থাকে তাহলে আপনি প্রথম অবস্থায় অল্প পুঁজি নিয়েই ব্যবসায় নেমে যেতে হবে। পাইকারি ব্যবসা শুরু করার পরে যখন একটু ভালো অবস্থা হবে তখন চাইলে আপনি বেশি বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে ঝুঁকি নেওয়ার সাহসিকতা থাকতে হবে। আসলে কত টাকা দিয়ে পাইকারী ব্যবসা শুরু করা যায়? টাকার সঠিক পরিমাণ বলা মুশকিল।

তবে আপনি যেই ধরনের বা যেই পণ্য নিয়ে পাইকারি ব্যবসা শুরু করবেন এবং সেই ব্যবসার একটি কতটুকু বিনিয়োগ করতে পারবেন এটি আপনার উপর পুরোপুরি নির্ভর করবে। তবে এতটুকু ধারণা দিতে পারি যে বেশিরভাগ পাইকারি ব্যবসা ক্ষেত্রে অর্ধ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা লাগে। এবার চলুন, আজকের পোষ্টের মূল বিষয় অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া জেনে নেই।

অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া ২০২৪

আমার মনে হয় পাইকারি যেকোন ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনি কোন বিষয় বা পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন সেটি বাছাই করে নেওয়াটা জরুরি। আপনি যদি সঠিক পন্যটি বাছাই করে নেন তাহলে সেই পন্যের ব্যবসার হিসাব-নিকাশ সহজ হয়ে যাবে। তাহলে চলুন দেখে আসি অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া।

(১) ব্যাগের পাইকারি ব্যবসা: আপনি যদি ব্যাগের পাইকারি ব্যবসা করতে চান তাহলে পরিমাণ একটু বেশি পুজি লাগবে। কিন্তু, যদি একবার ব্যবসা দাঁড়িয়ে যায় তাহলে ব্যবসা থেকে অনেক লাভবান হতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি উৎপাদনকারীদের সাথে কথা বলে পাইকারি মূল্য জেনে নিতে পারেন। তবে একটা দিক খেয়াল রাখতে হবে যে ব্যাগের মান ভালো হতে হবে তাহলে সেটা অবশ্যই বাজারে চলবে।

(২) টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা: টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা সাধারণত কম পুজি দিয়েই শুরু করা যায়। বর্তমান বাংলাদেশে টি শার্ট তৈরির অনেক কারখানার রয়েছে এখানে স্বল্পমূল্যে টি-শার্ট তৈরি হয়ে থাকে। আপনি খুব সহজেই উৎপাদনকারী বা কারখানা থেকে টি-শার্ট কিনে এনে খুচরা বিক্রেতাদেরকে বিক্রি করতে পারবেন। আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন, তাহলে বেশ ভালো পরিমাণ লাভবান হতে পারবেন।

(৩) ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা: ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা সাধারণত দুইভাবে করা যায় প্রথমটি হচ্ছে ব্র্যান্ডেড ঘড়ি এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে নন ব্র্যান্ডেড। আপনি যদি ব্র্যান্ডেড লাক্সারি ঘড়ি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে একটু বেশি পরিমাণে মূলধন প্রয়োজন পড়বে। এক্ষেত্রে আপনাকে ঘড়ি প্রস্তুতকারক যারা আছে তাদের সাথে একটি চুক্তিবদ্ধ ভাবে ব্যবসা করার প্ল্যানিং করতে হবে।

অপরদিকে আপনি যদি নন ব্র্যান্ডেড ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে অল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ঘড়ির পাইকারি বাজার সম্পর্কে আপনাকে বেশ জ্ঞান রাখতে হবে।

যেমন নন-ব্র্যান্ডেড ঘড়ি কোন উৎপাদনকারী বা প্রস্তুতকারী যাই বলেন না কেন এসব কোম্পানির যোগাযোগ রাখতে হবে, তাদের ঘড়ি ভালো বিক্রি হয়, বাজারে বেশি পরিমাণে চলে এমন কোম্পানি ইত্যাদি। এসব সম্পর্কে আপনাকে আগে থেকেই ভালোভাবে জেনে নিতে হবে

(৪) ধানের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে বাংলাদেশের ধানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে আমরা সকলেই জানি ধান থেকেই চাল বানানো হয়। আপনি চাইলে খানের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে গ্রামের বিভিন্ন হাটে গিয়ে ধান ক্রয় করে তারপর সেই ধান বিভিন্ন বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এই ব্যবসায় আপনি প্রচুর লাভবান হতে পারবেন।

(৫) চালের পাইকারি ব্যবসা: আমাদেরকে প্রতিদিন তিন বেলা ভাত খেতেই হবে। আমরা অনেকেই ভাতের তৃপ্তি অন্য কোনো খাবারে পায় না। এজন্য বাংলাদেশে চালের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে। আপনি চাইলে চালের পাইকারি ব্যবসা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নিতে হবে এবং সেই ধান বিভিন্ন মুদি দোকানদার এর কাছে বিক্রি করতে পারবেন।

(৬) সরিষার পাইকারি ব্যবসা: আমাদের বাংলাদেশে ধান ও চালের মতো সরিষার চাহিদাও তুলনামূলক বেশি। আপনি সহজেই গ্রামে বিভিন্ন হাট থেকে সরিষা কিনতে পারবেন। এরপর আপনি সেই সরিষাগুলো বিভিন্ন দামি কোম্পানির কাছে গিয়ে পাইকারি দামে বিক্রি করে দিতে পারবেন। আবার, আপনি চাইলে এই সরিষা ভাঙ্গিয়ে বিক্রি করতে পারবেন এক্ষেত্রে বেশ লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

(৭) ভুট্টার পাইকারি ব্যবসা: ভুট্টার পাইকারি ব্যবসা বেশ লাভজনক একটা ব্যবসা। আপনি যদি ভুট্টার পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে নির্দ্বিধায় শুরু করতে পারেন। কারণ বর্তমানে ভুট্টা দিয়ে অনেক কিছুই বানানো হয়।

এজন্য এর চাহিদা অনেক গুনে বেশি। এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন ভুট্টা হাট থেকে কিনে নিয়ে এসে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করতে পারবেন। সুতরাং পাইকারি ব্যবসা হিসেবে ভোটটা বেশ লাভজনক বলা চলে।

(৮) কসমেটিকস সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে মেয়েরা কসমেটিক্স বেশি ব্যবহার করে এবং তারা কসমেটিক্স পছন্দও করে। এজন্য এগুলো পন্যের চাহিদা অনেক বেশি। আর এই ব্যবসায় প্রচুর পরিমাণে লাভ হয়।

সুতরাং, আপনি চাইলে এই ব্যবসাটি পাকের হিসেবে শুরু করে দিতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে কসমেটিক্স পণ্য কিনে তারপর বিভিন্ন গ্রামে অথবা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করতে পারবেন।

(৯) শার্ট-প্যান্টের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে শার্ট প্যান্টের ব্যবসা অধিকাংশ মানুষই করছেন। বেশিরভাগ মানুষই এই ব্যবসায়ী সফলতার অর্জন করে থাকে। শার্ট-প্যান্টের ব্যবসায়ী চাহিদা রয়েছে কারণ প্রতিটা  পুরুষেরই শার্ট-প্যান্ট এর প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনি উৎপাদনকারী অথবা কারখানায় চুক্তিবদ্ধ ভাবে কিনে এনে সেটা বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে হবে। তাহলেই লাভবান হতে পারবেন।

(১০) স্টেশনারি পাইকারি ব্যবসা: অনেকেই হয়তো স্টেশনারি শব্দটি প্রথম শুনছেন। স্টেশনারি পণ্য বলতে বই, খাতা, কলম ইত্যাদিকে বোঝানো হয়। এই পণ্যেরও বেশ প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কেননা, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত পর্যন্ত স্টেশনারি পণ্যের ব্যবহার হয়। আপনি অল্প পুজি নিয়ে সহজেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। সবচেয়ে মুখ্য বিষয় হচ্ছে এ ব্যবসায়ী বিনিয়োগ তুলনামূলক কম। আর বিনিয়োগ কম হিসেবে এটি খুব ভালো একটি পাইকারি ব্যবসা হতে পারে।

(১১) জুতার পাইকারি ব্যবসা: নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে জুতা অন্যতম। কেননা, পৃথিবীতে মানুষ যতদিন থাকবে জুতার চাহিদাও ততদিনে থাকবে জুতার চাহিদা কখনোই কমবে না। তাই আপনি চাইলে জুতার পাইকারি ব্যবসা করে  বেশ ভালো পরিমাণে লাভবান হতে পারে। জুতার পাইকারি ব্যবসা আরেকটি অন্যতম ভালো দিক হচ্ছে, আপনি যদি একটু বেশি বিনিয়োগ করে নিজেই জুতা তৈরি করতে পারেন এক্ষেত্রে আপনি প্রফিটও বেশি অর্জন করতে পারবেন।

(১২) বাচ্চাদের খেলনার পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে বাচ্চাদের খেলনার কি পরিমাণ চাহিদা সেটা একমাত্র খেলনা বাজারে গেলে বুঝতে পারা যায়। কেননা, প্রতিটা শিশুর শৈশবকাল কাটে খেলার সাথে। সুতরাং আপনি চাইলে স্বল্প ইনভেস্টমেন্টে বাচ্চাদের খেলনার ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

(১৩) মুদি পণ্যের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে শুধু বাজারেই নয় এখন অলিতে গলিতে মুদির দোকান দেখা যায়। আমরা প্রায়ই মুদির দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে থাকি। মুদির দোকানদারেরা বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করে থাকে। আপনি চাইলে পরিমানমতো পুজি নিয়ে চাহিদা সম্পন্ন পন্য যেগুলো প্রতিদিন মানুষ কিনে সেগুলো পাইকারিতে বিক্রি করতে পারবেন।

(১৪) উপহার আইটেমের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমানে প্রতিদিনই কারো কারো জন্মদিন ও অনুষ্ঠান বা বিভিন্ন স্মরণীয় দিন উদযাপন করা হয়। এ সকল অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে অনেকে অনেক কিছু কিনে নিয়ে যায়। এজন্য উপহার আইতেছে চাহিদাও বেশ ভালো। আপনি চাইলে অল্প  ইনভেস্টমেন্টে উপহার আইটেমের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

(১৫) খাবার পন্যের পাইকারি ব্যবসা: পৃথিবীতে মানুষ যতদিন বেঁচে আছে খাবার পণ্যের চাহিদা কখনোই কমবে না। আমরা প্রায় প্রতিদিনই দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনে থাকি। খাবার পণ্য বলতে বিস্কুট, চানাচুর।

অর্থাৎ যেগুলো বেকারি আইটেম রয়েছে আপনি চাইলে বেকারি আইটেমের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে বেকারি পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। এজন্য, এগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ রাখাটা জরুরী তাই ভালো পরিমাণে বিনিয়োগও থাকতে হবে।

(১৬) ফলের পাইকারি ব্যবসা: ফল আমাদের মানব দেহের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য। বর্তমানে আমাদের দেশে ফলের চাহিদা অনেক।এজন্য আপনি চাইলে সরাসরি ফল চাষিদের কাছ থেকে অথবা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে ফল কিনে এনে সেগুলো আবার বাজারে পাইকারি ভাবে বিক্রি করতে পারবেন।

তবে আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে সেটি হচ্ছে প্রথমে আপনি কম টাকা বিনিয়োগ করে অল্প পরিমাণে ফল বাজারে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করুন। কারণ, ফল যেহেতু পচনশীল খাদ্য সেজন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে ফল পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

(১৭) ফার্ণিচারের পাইকারি ব্যবসা: আমাদের প্রায় সকলেই ঘরে কমবেশি ফার্নিচার রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সকলেরই ফার্নিচার প্রয়োজন হয়। বর্তমান বাজারে ফার্নিচারের দাম অনেক বেশি। আপনি যদি ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনি ফার্নিচার মিস্ত্রি দিয়ে নিজে ফার্নিচার বানিয়ে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হবে। তবে এই ব্যবসার জন্য আপনাকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে শুরু করতে হবে।

(১৮) ইলেক্টনিক পণ্যের পাইকারি ব্যবসা: বর্তমান বাজারে ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদাও অনেক বেশি। আমরা সকলেই জানি যে ইলেকট্রনিক পণ্য বেশি নষ্ট হয় এজন্য ইলেকট্রনিক পণ্য বাজারে বেশি বিক্রি হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে যেগুলো চাহিদাসম্পন্ন সেগুলো পণ্য নিয়ে আপনি চাইলে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

প্রথম অবস্থায় আপনি অল্প পুজি দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। যখন আপনার ব্যবসা একটু ভালো পর্যায়ে থাকবে তখন আপনি বেশি ইনভেস্ট করে ব্যবসাটি আরও বড় করতে পারবেন।

(১৯) চকলেটের পাইকারি ব্যবসা: প্রিয় মানুষদের শুভকামনা জানানোর জন্য উপহার আইটেমের পাশাপাশি আমরা চকলেট হিসেবেও উপহার দিয়ে থাকি। বর্তমানে বেশিরভাগ চকলেট দেশের বাইরে থেকে ইমপোর্ট করা যায়। এজন্য, আপনি চাইলেও বিভিন্ন দেশ থেকে চকলেট নিয়ে এসে বাংলাদেশের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

(২০) বীজ, সার ও কীটনাষকের পাইকারি ব্যবসা: আমরা জানি যে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি কৃষি প্রধান দেশ।এদেশের গ্রামের মানুষেরা  জীবন যাপন করে সকলে কিসের উপর নির্ভরশীল। তাই, আপনি চাইলে বীজ স্যার ও কীটনাশক বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি থেকে কিনে কৃষকের কাছে খুচরা দারে বিক্রি করতে পারবেন। এতে আপনি অনেক লাভবান হতে পারবেন।

পাইকারি ব্যবসা শুরু করার ধাপসমূহ

আপনি যদি ইতিমধ্যে ভেবেই ফেলেন যে আপনি আপনার সাধ্যমত একটি পাইকারি ব্যবসার সুযোগ করবেন সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে যেমন-
  • সাধ্যমতো বিনিয়োগ প্রস্তুত করা
  • সরবরাহকারীদের সাথে যোগাযোগ করা
  • স্টোর হাউস প্রস্তুত করা
  • প্রয়োজনীয় পেপারস প্রস্তুত করা
  • বিভিন্ন ক্রেতাদের কাছে যাওয়া
  • সততা ও ধৈর্য সম্পন্ন হওয়া ইত্যাদি।

পাইকারি ব্যবসা কি সবার করা উচিত?

ব্যবসা শুরু করে ব্যর্থতার পাশাপাশি হতাশার সম্মুখীন হতে পারেন। এজন্য কিছু বিষয় সকলেরই জানা দরকার। এখন চলুন, আমরা জেনে নেই ব্যবসা করার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় আপনাকে কোন বিষয় হলে থাকতে হবে।
  • প্রথমত প্রচুর ধৈর্য রাখতে হবে
  • ক্রেতার সাথে বন্ধুসুলভ আচরন দেখাতে হবে
  • বিনিয়োগ করার মত মনোভাব থাকতে হবে
  • ঝুঁকি নেওয়ার মতো সাহস থাকতে হবে
  • কখনো ক্ষতি বা লোকসান হলে ভেঙ্গে না পড়ে নতুন করে শুরু করতে হবে।

লেখকের শেষ কিছু কথা

পরিশেষে বলতে চাই যে, আপনি যদি উল্লেখিত পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া অনুসরণ করে নিজের সাধ্যমতো পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে প্রতিটা ব্যবসার ক্ষেত্রে সঠিক পথ অবলম্বন করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি সঠিক পথ অনুসরণ করে সে পথ অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারেন, তাহলে অবশ্যই ব্যবসায়ে আপনি লাভজনক হতে পারবেন। আপনার প্রতি দোয়া ও শুভকামনা রইলো।

আমরা ইতিমধ্যে অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া ২০২৪ এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করছি, আপনারা জেনে উপকৃত হবেন। আপনি যদি সম্পূর্ণ পোষ্টে কোন বিষয়ে বুঝতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। তাহলে, যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাকে সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

অল্প পুজিতে সেরা ২০টি পাইকারি ব্যবসা করার আইডিয়া ২০২৪ এই সম্পর্কে লেখা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করবেন। এতে অন্য যারা ২০২৪ সালে অল্প পুজিতে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে তারাও এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তথ্যবহুল নিত্য নতুন স্বাস্থ্য এবং প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url