নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে - ইতিবাচক চিন্তা ও মনোভাব কি

বর্তমানে আমরা সবসময়ই কোন কোন ভাবনায় মগ্ন হয়ে থাকি। তার মধ্যে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা অন্যতম। আমাদের ভাবনা গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেতিবাচক হয়। কারণ আমাদের অভ্যাসই হচ্ছে নেতিবাচক চিন্তায় মগ্ন থাকা। যতদিন না আপনি এই নেতিবাচক ভাবনা মন থেকে দূর করতে পারবেন ততদিন এই চিন্তাগুলো আপনার মনের মাঝে ডালপালার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে।
নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে - ইতিবাচক চিন্তা ও মনোভাব কি
নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা থেকে আস্তে আস্তে অতি মাত্রায় দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ও উদ্বিগ্নতা ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। আপনি যদি প্রকৃতভাবে নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন তবেই এটা অতি তাড়াতাড়ি তাড়ানো সম্ভব হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

বর্তমানে আমাদের সঙ্গে যা কিছু ঘটে থাকে অনেক সময় আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। কিন্তু আমরা নিজে থেকে কেমন ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া দেখাবো তা সম্পূর্ণটাই আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়ার ইতিবাচকতা এনিয়া আসার কারণে অনেক ক্ষেত্রে নেতিবাচক ঘটনার প্রতিক্রিয়া কমে যায়। আত্মবিশ্বাস ক্ষুন্ন হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দিনের পর দিন এসব ভাবনার মধ্যে লিপ্ত থাকা। 

ইতিবাচক চিন্তা ও মনোভাব কি

কিছু কিছু সময় স্বাস্থ্যসেবা বা ওষুধ সুস্থতার জন্য পরিপূর্ণ নয়। নিজের মনকে আকর্ষণীয় রাখতে বা অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করে বেঁচে থাকার ইতিবাচক চিন্তাভাবনার  অনুশীলনের বিকল্প পথ নেই। যেমন কথা বলার সময় অবশ্যই ইতিবাচক সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে এমন শব্দ ব্যবহার করবেন না যেখানে নেতিবাচক রয়েছে। এজন্য ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
আমরা জানি ইতিবাচক চিন্তাভাবনার মানুষগুলো কঠিন পরিস্থিতিকে খুব স্বাভাবিকভাবে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য ইতিবাচক মনোভাব থাকাটা অতি জরুরী যে আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনকে উৎফুল্ল করে তুলবে। ইতিবাচক মনোভাবটি খুব জটিল নয় এটি অনুশীলনের মাধ্যমে ঠান্ডা মাথায় পরিবেশকে নিজের পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করে যেতে হবে।

ইতিবাচক মনোযোগের চর্চা করা

নিজেকে কিছু অস্থির সময় থেকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দূরে সরিয়ে রাখুন এবং একটি শান্ত পরিবেশে মধ্যে মনোযোগের চর্চা করুন। বিভিন্ন বিক্ষিপ্ততা থেকে মুক্ত পাওয়ার চেষ্টায় কোন  না কোন ইতিবাচক স্থান রয়েছে। সেই দিকটাতে মনোযোগী হতে পারেন। সব সময় যে একটু ধ্যানের মধ্যে থাকতে হবে এমন কোন নিয়ম কানুন নেই। জীবনটাকে নিজের মতো করে ইতিবাচকতার মাধ্যমে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। আপনার মনোভাব কে ইতিবাচক রাখতে কিছু পরামর্শ অনুশীলন করুন বা মেনে চলুন।
  • কারো সাথে কথা বলার সময় এমন শব্দ ব্যবহার করুন, যেখানে ইতিবাচকতা রয়েছে।
  • ইতিবাচক নয় এমন সমস্ত অনুভূতি বারবার মনের ভিতরে উৎফুল্ল জাগানো থেকে বিরত থাকুন।
  • আপনার মনের ভিতরে কিছু ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরুন যা আপনার খারাপ বিষয়কে বা অনুভূতিকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • হতাশাকে দূর করে সাফল্যকে উপভোগ করুন।
  • নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন।
  • নিজেকে সব সময় আরামদায়ক রাখুন কারণ কখনো কখনো সমস্যার সমাধান মোকাবেলা করার সর্বোচ্চ উপায় হল আর আমি।

সব সময় নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসে কেন

চিন্তা ভাবনা যেমন হবে অনুভূতিটাও ঠিক তেমনি হবে, আবার অনুভূতিটা যেমন হবে কাজকর্মগুলো ঠিক তেমনি হবে। একই কাজ প্রতিদিন করলে সেটি আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। সুতরাং, মুখ্য বিষয় হচ্ছে চিন্তাভাবনা। আমরা ভালো চিন্তা-ভাবনা করলে মনের মধ্যে ভালো অনুভূতি জাগ্রত হয় যার ফলে সবার মাঝে তখন ভালো আচরণ করে থাকি।
প্রথমত আমরা তথ্যের ধরনের উপর ভিত্তি করে চিন্তা ভাবনা করি যার ফলে নেতিবাচকতা আমাদের মনের ভিতর বিরাজ করে। আপনি কোন পরিবেশের সাথে বিরাজমান আছেন সেই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আপনি মনে করেন আপনি একটি দেশে সংস্থার কাজ করছেন। একই সাথে আপনি ভা্‌ খারাপ, সুন্দর ইতিবাচক ইত্যাদি কথা শুনছেন। 

আপনি ইতিবাচক তথ্যের সমৃদ্ধ হচ্ছেন যার ফলে আপনার ইতিবাচক চিন্তাই সৃষ্টি হচ্ছে আপনি দুর্নীতি করে সম্পদশালী হবেন। ভালো কাজ করবেন। নাকি খারাপ কাজ করবেন, নাকি সততার পথে থাকবেন এই সকল বিষয়ে নির্ভর করছে আপনি কি ধরনের তথ্যের মধ্যে অবস্থান করছেন।

খারাপ চিন্তা থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে

একটি চিন্তা ভাবনা কে অন্য ভাবনায় রূপান্তর করা যায়। যেই মুহূর্তে কোন নেতিবাচক বিষয়ই আপনার মাথায় দুশ্চিন্তার আভাস এনে দেবে সেই মুহূর্তে চলন চলমান দিনের সময় ভালো কোন দিক নিয়ে চিন্তা করা যায়। কিংবা মিলিত ঘটনার খারাপ দিক যখন বেশি বেশি চোখে ধরবে তখন সেটির কোন ভালো দি ক আছে কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। আমরা ইংরেজিতে যেটাকে বলে থাকি সিলভার লাইন অর্থাৎ খুঁজে বের করা।

অযথা চিন্তাভাবনা মানুষকে প্রশংসা বা নিন্দা এ দুটি সত্যের পথ থেকে দূরে নিয়ে যাই। সেজন্য গঠনমূলক সমালোচনার প্রয়োজন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কারো পরনিন্দায় যেন নিজেকে জড়িত না হতে হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য নিজেই নিজেকে এবং অন্য ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী সে ব্যক্তিকেও ঠিক সমালোচনার মাধ্যমে যত সম্ভব কাছাকাছি রাখা। এমতবস্থায় নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকা যাবে।
একজন স্বাভাবিক মানুষের চিন্তা-ভাবনা যুক্তিসম্মত হতে হবে। তবে আবেগময় জীবন আমাদেরকে কাপড় দিকে ঠেলে দেয়, যার ফলে আমরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। এজন্য, আমরা কথায় কথায় বলে ফেলি যুক্তিতেই মুক্তি। কিছু কিছু বিষয়ে নজর রাখতে হবে যে কেন এমনটা হলো, কিভাবে এ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে এবং কোন ধরনের আচরণ করলে এ বিষয়টি পুরোটাই বিগড়ে যাবে এসব খতিয়ে দেখতে হবে।

খারাপ চিন্তা করার চেয়ে ভালো চিন্তা করা কেন সহজ

দুই ব্যক্তির চিন্তা আছে তো না অবশ্যই আলাদা হয়। কারো চিন্তা-ভাবনা ইতিবাচক বেশি আবার কারো চিন্তাভাবনার নেতিবাচক বেশি। ইতিবাচক চিন্তার ফলে মানসিক মনোভাব ধারণ করার জন্য প্রতিটি কাজে মূল্য ভালো এবং ফলাফল সন্তোষজনক। সুতরাং মানসিকভাবে জীবনকে সুস্থ সুন্দর করতে হলে ইতিবাচক এর কোন বিকল্প নেই।

কোন এক পরিস্থিতিতে নিজের সাথে যখন খারাপ কিছু ঘটতে যায় তখন আমরা না ঘাবরিয়ে অপেক্ষা করার চেষ্টা করব। নিজেকে সময় দেয়ার চেষ্টা করব, এই প্রক্রিয়াটি ইতিবাচক হতে আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। তাহলে দেখবে আপনার কাছে ইতিবাচক চিন্তাটি অনেক সহজে হয়ে যাবে।

কিছু কিছু মানুষ আছে যারা আপনাকে গঠনমূলক কাজ করতে সহায়তা করেনা তাদের থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে। যেসব মানুষ আপনার কাজে আশাবাদী হতে সাহায্য করবে এমন ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করুন তাহলে আপনি হতাশার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন এবং এটি আপনাকে ইতিবাচক হতে সাহায্য করবে।

সম্ভব হলে অন্য কাউকে নিজের সাধ্যমত সাহায্য করুন। কেননা অন্যকে সাহায্য করলে মনের মধ্যে একটি আত্মতৃপ্তি অনুভূত হয় যা আপনাকে ইতিবাচক হতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন চেষ্টা করবেন ইতিবাচক সম্পর্কে কিছু তথ্য নেওয়ার বা কোন পুস্তক পড়ার। যারা ব্যর্থপর্যায়ে আছেন তারা চেষ্টা করবেন, ইতিবাচকতার মধ্যে সংযুক্ত করার। ইতিবাচক লেখায় আশা বাড়ায় এবং মনের ভয় দূর করতে সক্ষম হয়।

কোন ভুল হলে প্রতিনিয়ত আমরা নিজেকে দোষারোপ করে থাকি যা নেতিবাচকতার মধ্যে আরোপ করে। এমত অবস্থায় আমাদের উচিত হবে নিজেকে দোষারোপ না করে নিজেকে ক্ষমা করতে শেখার। কারণ আমাদের উচিত ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে যেতে ভবিষ্যতে এমন আর ভুল না হয়। এজন্য অবশ্যই উচিত নিজের ক্ষমা করা। মানুষ মাত্রই ভুল। আমরা কেউ পুরোপুরি নিখুঁত নয় এ কথাটা মেনে নিলে, নিজেকে ক্ষমা করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

উপসংহার

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, চর্চার মাধ্যমে যে কোন অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ আবার বদভ্যাসগুলা পরিত্যাগ করতে পারি। নিজেকে সবসময় ইতিবাচক হিসেবে গড়ে তুলুন তাহলে আপনি অবশ্যই ইতিবাচকতার ফল পাবেন।প্রতিদিন আকাঙ্ক্ষার মত মস্তিষ্কে জমাত বেঁধে থাকা এই ভাবনাগুলি কেউ নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে পরিত্যাগ করা যায়। শুধুমাত্র ইতিবাচক চিন্তা ভাবনায় আপনার জীবনকে উৎফুল্ল হিসেবে গড়ে তুলবে। দিন শেষে একটি সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করা যায়।
 
নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও শেয়ার করুন। এতে অন্যরাও এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তথ্যবহুল নিত্য নতুন স্বাস্থ্য এবং প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url