গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা
দৈনন্দিন জীবন ও খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি
ভাব অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব
কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় বমি বমি
ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে না থাকেন, তাহলে বেশ উপকারে আসার
পাশাপাশি এই বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানতে পারলে আপনি নিজে থেকেই সমাধান বের করবেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন, গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর কার্যকরী ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হওয়াটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। গর্ভকালীন সময়ে
অধিকাংশ নারীদেরই এ সমস্যা হয়। তবে গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা খুব একটা গুরুতর
সমস্যা নয়। একজন গর্ভবতী মহিলা যদি কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরন করে তাহলেই
অতি সহজেই বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।
আজকের আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর কার্যকরী ৬টি ঘরোয়া
চিকিৎসা, গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কমানোর ওষুধ, গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি
হয়?, গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ কি?, গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কি
গর্ভের শিশুর ক্ষতি করে? এসকল সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে আসুন, আর কথা না
বাড়িয়ে কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরন করে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানো যায়
সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
মর্নিং সিকনেস কি | মর্নিং সিকনেস বলতে কি বোঝায়
মর্নিং সিকনেস বলতে গর্ভকালীন সময়ে বমি বমি ভাব ও বমি করার প্রবণতাকে বোঝায়
অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় বমি ভাব অথবা বমি করার প্রবণতাকে ইংরেজিতে মর্নিং সিকনেস
বলা হয়। তবে শুধু যে সকালের দিকে বমি বমি ভাব মনে হবে তা কিন্তু নয়।
অনেকের দিনের যে কোন সময়েও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। মূলত গর্ভকালীন সময়ে
প্রথম দিকে ৪ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়।
কাদের মর্নিং সিকনেস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?
কাদের মর্নিং সিকনেস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে সেটি জেনে নেওয়াও জরুরি।
কয়েকটি কারণ রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কিংবা বমি হয়
ঝুঁকি সাধারণার চেয়ে অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় যেমন আপনার যদি-
- গর্ভকালীন সময়ে ঘ্রাণ শক্তি পূর্বের চেয়ে বেশি হয়ে যায়
- প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হলে
- ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে
- মাইগ্রেনজনিত সমস্যা থাকলে
- গর্ভে একটির অধিক সন্তান থাকলে
- পারিবারিকভাবে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাবের ইতিহাস থাকলে
- কোনো যানবাহনে চড়ে ভ্রমণ করার সময় বমি হলে যাকে মোশন সিকনেস বলা হয়।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া
একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অনেক উপকারী। প্রতিটি গর্ভাবস্থা একে অপরের তুলনায়
আলাদা হওয়ার কারণে সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।
আবার একই রকম চিকিৎসায় যে সকল গর্ভবতী মহিলার সমস্যা দূর হয়ে যাবে
ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। এজন্য ঘরোয়া কিছু নিয়মকানুন যেমন দৈনন্দিন
জীবনে ও খাদ্য তালিকা কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসলে এই সমস্যা বেশিরভাগই
নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর কার্যকরী ৬টি ঘর ও
চিকিৎসা হলো-
- বমি ভাব জাগরিত করে এমন জিনিস এগিয়ে চলা
- বেশি পরিমাণে তরল খাবার ও পানি খাওয়া
- আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করা
- নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া
- আদাযুক্ত খাবার খাওয়া
- পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া।
এবার চলুন গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা
সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য জেনে নেই। আশা করছি, এই সম্পর্কে জেনে
আপনি উপকৃত হবেন।
বমি ভাব জাগরিত করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলা: গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব
কমাতে হলে প্রথম পর্যায়ে বমি ভাব জাগরিত করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলতে
হবে। কেননা গর্ভকালীন সময়ে অনেক গর্ভবতী মহিলার ঘ্রাণশক্তি আগের
তুলনায় তীব্র হয়ে যায়।
আপনি যেই গন্ধগুলো গর্ভধারণের পূর্বে খুব একটা বুঝতে পারতেন না অথবা খেয়াল
করতেন না সেটি গর্ভধারণ করার পরে আপনার নাকে এসে লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে
অস্বস্তি অনুভূত হয়ে বমি বমি ভাব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সেজন্য যেসব গন্ধে অস্বস্তি অনুভূত হয় সেগুলো থেকে যথাযথভাবে এড়িয়ে
চলতে হবে।
বেশি পরিমাণে তরল খাবার ও পানি খাওয়া: একজন গর্ভবতী মহিলাকে
সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে হলে প্রতিদিন প্রায় ২ লিটার পানি পান করা উচিত।
গর্ভকালীন সময়ে তরল খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে বমি ভাব
কমাতে সাহায্য করতে পারে। তরল খাবার ও পানি হিসেবে যেমন ওরস্যালাইন ও ভাতের
মাড় খেলে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পানির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করবে।
আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করা: আকুপ্রেসার ব্যান্ড হচ্ছে এমন
একটি মাধ্যম যা হাতের কব্জির (Pressure point P-6) নির্দিষ্ট জায়গায় চাপ
দেওয়া হয় যাকে আকুপাংচার থেরাপি বলা হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে
আকুপাংচার থেরাপি প্রয়োগ করে অনেকে বমি বমি ভাব কমে যায় বলে ধারণা করা হয়।
তবে এই থেরাপির কার্য হইতাম এখন পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত নয়। এই থেরাপি নিয়ে।
এখন পর্যন্ত গবেষণা চলমান রয়েছে।
নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া: আমি প্রথমেই একটি কথা দিয়ে শুরু করেছি
সেটি হচ্ছে, দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য তালিকায় সহজ কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসলেই
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অনেকাংশেই কমে যায়।যেমন প্রতি এক থেকে দুই ঘন্টা
পর পর অল্প পরিমাণে খাবার খেতে পারেন।
এতে পেট খালি থাকার সম্ভাবনা থাকবে না। আবার খালি পেটে কাজকর্ম শুরু না করে
ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে হালকা কিছু (খাবার রুটিন অনুযায়ী)
নাস্তা খেয়ে নিতে পারেন। অতি সহজেই খাবার হজম হয়ে যায় যেমন কম
মসলাযুক্ত এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আদাযুক্ত খাবার খাওয়া: বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রে প্রমাণিত
হয়েছে যে, গর্ভকালীন সময়ে বমি কমাতে ও বমি বমি ভাব দূর করতে আদায়যুক্ত
খাবার অনেক ভূমিকা পালন করে। পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি৬ ওষুধ যেমন বমি ভাব
কমাতে সাহায্য করে তেমনি আদা এই ওষুধের সমান কাজ করে।
আপনি যদি কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য অনেক উপকারী
হবে। তবে গর্ভকালীন সময়ে অনেকেই কাঁচা আদা খেতে পারে না। এজন্য আপনি চাইলে
গরম পানিতে আদা কুচি করে আদা চা খেতে পারে এতেও আপনার উপকারে আসবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া: সাধারণত শরীর যদি ক্লান্ত হয়ে
যায় তাহলে বমি বমি ভাব হওয়ার প্রবণতা দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে। এজন্য এসময়ে
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়াটা অতি জরুরী। একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ঘুম ও
বিশ্রাম ভাবে শুধু বমি হওয়ার প্রবণতা কমায় না বরং অন্যান্য যেগুলো খারাপ
প্রবণতা রয়েছে সেগুলো থেকে রেহাই পাবেন।
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কমানোর ঔষধ
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর জন্য সঠিকভাবে ঘরোয়া পরামর্শগুলো মেনে
চলার সত্ত্বেও অনেকের বমি ভা সেরে ওঠেনা যার ফলে কিছু ঔষধ সেবন করতে
হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভকালীন সময়ে বমি বমি ভাব কমানোর
জন্য পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি৬ ব্যবহার করতে বলেন। আবার অনেক সময়
চিকিৎসকরা গর্ভকালীন সময়ে বমি কমাতে এই ঔষধটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
গর্ভবতী মহিলা ভিটামিন বি৬ ঔষধ ফার্মেসী থেকে নিয়ে নিরাপদে সেবন করতে
পারবে। তবে এই বিষয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সাথে
পরামর্শ বা কথা বলে নিন। এছাড়াও বমি ভাব কমানোর জন্য পাইরিডক্সিন এর
পাশাপাশি চিকিৎসক আপনাকে ডক্সিলঅ্যামিন নামক একটি অসৎ খাওয়ার পরামর্শ
দিতে পারে। এই ওষুধ এক ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ।
যা গর্ভকালীন সময়ের জন্য এটি নিরাপদ হিসেবে রচিত করা হয় অর্থাৎ চিকিৎসকরা
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কমানোর ক্ষেত্রে এটি নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করে।
অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধটি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে খাওয়া যায় আবার
ভিটামিন বি ৬ একত্রে মেশানো অবস্থায় কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু, এটি
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই
ওষুধ খাওয়া যাবে না।
ডক্সিলঅ্যামিন ও পাইরিডক্সিন ঔষধ খেয়ে যদি কোন উন্নতি না হয় তাহলে
চিকিৎসক আপনাকে বমি কমানোর জন্য নির্দিষ্টভাবে ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিতে
পারে। এছাড়াও ফার্মেসী গুলোতে বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন পাওয়া যায়। এগুলা
সাধারণত ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। আবার ইনজেকশন
কিংবা সাপোজিটার হিসেবেও দিয়ে থাকে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য যে, গর্ভকালীন সময়ে বমি বমি ভাব মি কমানোর সব ধরনের
ওষুধগুলো নিরাপদ কিনা সেটি সঠিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। সুতরাং, বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ধরনের বমির ঔষধ কখনোই খাওয়া উচিত নয়। এতে
গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। গর্ভের শিশুর জন্য
একজন গর্ভবতী মহিলাকে সকল প্রকার দিক থেকে সচেতন থাকতে হবে।
গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়?
সাধারণত ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর থেকে ১০০ ভাগের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ
মহিলাদের বমি শুরু হয়ে থাকে। আবার প্রেগন্যান্ট হওয়ার ২৮ থেকে ৪২ দিন হলে
বমি বমি ভাব দেখা যায়, অরুচি ভাব দেখা যায়, মাথা ঘুরার লক্ষণ দেখা যায়,
প্রচন্ড শরীর দুর্বল লাগে ইত্যাদি। গর্ভকালীন সময়ে যদি অতিমাত্রায়
বা অতিরিক্ত পরিমাণে বমি শুরু হয় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ
নেওয়া উচিত হবে।
এভাবে আপনি গর্ভকালীন সময়ে অতি মাত্রায় বমি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী তাদের দেয়া পরামর্শ মেনে বমি বমি ভাব অথবা বমি বন্ধ করতে পারবেন।
তাহলে দেখবেন আপনার কিছুদিনের মধ্যে আপনার খাবারের প্রতি রুচি চলে আসবে যার
ফলে মা ও গর্ভের সন্তান দুজনেই সুস্থ থাকতে পারবে। গর্ভকালীন সময়ে অনেক
মহিলাদের দেখা যায় তাদের ডেলিভারি হওয়ার ডেট অতিক্রম হয়ে গেলেও তাদের
ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত বমি হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ কি?
এবার আমরা জেনে নেব গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ কি? গর্ভাবস্থায়
বমি বমি ভাব হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে শরীরের মধ্যে হরমোনের তারতম্য।
এছাড়াও আরো কিছু রোগের কারণে বমি বমি ভাব দেখা দেয় যেমন-
- থাইরয়েড জনিত রোগ থাকলে
- পেটে আলসার জনিত রোগ থাকলে
- ফুড পয়জনিং থাকলে
- পিত্তথলির রোগ থাকলে
-
কিডনিতে ইনফেকশন জনিত সমস্যা থাকলে আর সঠিক চিকিৎসা অভাবে প্রসবের
ইনফেকশন কিডনিতে ছড়িয়ে গেলে বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
বমির সাথে কোন লক্ষণগুলো থাকলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন?
বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাদের হয়তো একটি সাধারণ প্রশ্ন জাগে সেটি হচ্ছে
বমির সাথে কোন লক্ষণ গুলো দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবো? আজকে এই
প্রশ্নের উত্তরও আপনি জেনে যাবেন। গর্ভাবস্থায় বমির সাথে নিম্নের কোন
লক্ষণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
- ওজন কমে গেলে
- ঘন ঘন জ্বর আসলে
- শরীর দুর্বল হয়ে গেলে
- বমির সাথে রক্ত উঠলে
- অতিরিক্ত মাথাব্যথা হলে
- পেটে ব্যথা অনুভব করলে
- প্রসাবের সময় ব্যাথা অনুভব করলে
- ৫ থেকে ৬ ঘন্টার অধিক সময়ের মধ্যে প্রস্রাব না হলে
- আপনি সারাদিনে যেগুলো খাবার খাচ্ছেন সেগুলো সবকিছু বমির সাথে উঠে গেলে
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কি গর্ভের শিশুর ক্ষতি করে?
অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলার গর্ভকালীন সময়ে মনে একটি প্রশ্ন জাগে সেটি হচ্ছে
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কি গর্ভের শিশুর ক্ষতি করে? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডা.
লাবিবা খাতুন বলেন সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে প্রথম ত্রৈমাসিকে বমি বমি
ভাব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক একটি লক্ষণ। এতে গর্ভবতী মহিলার গর্ভের শিশুর
ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভকালীন সময়ে প্রথম দিকে হওয়া বমি ভাব ও
বমির সাথে গর্ভবতীর ঝুঁকি কমে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব
নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার নেই। তবে গর্ভকালীন সময়ে
অতিমাত্রায় বমি বমি ভাব কিংবা হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম (Hyperemesis
Gravidarum) হলে গর্ভের শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্ম
নিতে পারে।
কিন্তু গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব যদি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়
বাধা হয়ে যায় তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। কেননা
একজন গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভকালীন সময়ে প্রতিটা পদক্ষেপে সচেতন থাকা
জরুরি। এক্ষেত্রে গর্ভকালীন পর্যায়ে চেকাপের সময় এই বিষয়টি
ডাক্তারের সাথে সঠিকভাবে পরামর্শ করে নিতে পারেন।
শেষকথাঃ গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা
পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করব যে একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর সুস্থ রাখার জন্য
পরিবারের সকলকে যাবতীয় কাজ ও যত্ন নিতে হবে। ইতিমধ্যে গর্ভাবস্থায়
বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসাসহ গর্ভবতী মায়ের অন্যান্য বিষয়
নিয়ম বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি আশা করছি জেনে উপকৃত হয়েছেন।
গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য তালিকা ও সহজ কিছু
পরিবর্তন আনতে হবে। যার ফলে গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ শিশুর উভয়েরই উপকারে
আসবে। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলে কোন বিষয়ে বুঝতে না পারেন, তাহলে
অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। তাহলে আমি যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে
আপনাকে সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর ৬টি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কিত আমাদের
আজকের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য
ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের
ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url