গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা - সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আশা করছি, আপনারা সকলেই ভালো আছেন। গর্ভকালীন সময়ে অনেকের শরীরের মধ্যে মানসিক ও শারীরিক কারণে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন কোনো কাজ করার সময় হঠাৎ করে হাত থেকে কিছু ফসকে পড়ে যাওয়া কিংবা অসচেতন ভাবে বারবার হোঁচট খাওয়া। এ সময়ে প্রতিটা গর্ভবতী নারীকেই সচেতন থাকাটা খুবই জরুরি।
গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা - সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

গর্ভকালীন সময়ে এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো বেশিরভাগ নারীরই হয়ে থাকে। তাই, আজকের পোষ্টে গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা ও সমস্যা প্রতিরোধে করণীয় কি সেই সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি যদি এই সম্পর্কে জেনে না থাকেন, তাহলে আশা করছি বেশ উপকারে আসার পাশাপাশি এই বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানতে পারলে নিজে থেকেই সমাধান বের করতে পারবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

উপস্থাপনা

গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হওয়াটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। গর্ভকালীন সময়ে অধিকাংশ নারীদেরই এ সমস্যা হয়। তবে গর্ভকালীন সময়ে এই সমস্যা খুব একটা গুরুতর সমস্যা নয়। তবে অনেক গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যার জন্য ভোগান্তি সৃষ্টি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা এবং এই সমস্যা প্রতিরোধে করণীয় কি সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া জরুরি।

প্রিয় পাঠক, গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা ও সমস্যা প্রতিরোধে করণীয় কি এই  বিষয়ে আলোচনার করার পাশাপাশি আজকের পোষ্টে গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়ার কারণ কি? গর্ভাবস্থায় ভারসাম্য হারানো সমস্যার প্রতিরোধে করণীয়, ভারসাম্য হারালে কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত ইত্যাদি সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ টপিকে আলোচনা করেছি।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা এই বিষয়ে গুগলের কাছে জানতে চায়। আবার অনেক গর্ভবতী নারী গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতার সম্মুখীন হয়েছেন কিন্তু তিনি হয়তো বুঝতেই পারেননি যে এমনটা হওয়ার কারণ কি বা এমনটি কেন হয়? তাহলে আসুন, আর কথা না বাড়িয়ে প্রথমে গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা কি হতে পারে সেই সম্পর্কে জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা বলতে অনেক গর্ভবতী নারীর শরীরের মধ্যে মানসিক ও শারীরিক কারণে নানান ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। গর্ভকালীন সময়ে যখন কোনো নারী কাজ করেন তখন দেখা যায় অনেক সময় হঠাৎ করে বেখায়ালিভাবে বার বার হাত থেকে কিছু ফসকে পড়ে যায় কিংবা অসচেতন ভাবে বারবার হোঁচট খায়।

সাধারনত এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো বেশিরভাগ গর্ভবতী নারীরই হয়ে থাকে। এমনটা বারবার দেখা দিলে বুঝতে হবে গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। প্রথম অবস্থায় এই প্রবনতা সামান্য থাকলেও গর্ভকালীন সময়ের শেষ দিকে।

বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসে এ ধরনের সমস্যাগুলো অনেকের ক্ষেত্রে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি এ সময়ে সহজ কিছু উপায় মেনে চলেন তাহলে  এ সমস্যাগুলো অনেকটাই রেহাই পেয়ে যাবেন। এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়ার কারণ কি।

গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়ার কারণ কি

গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। গর্ভাবস্থায় শরীরের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক কারণগত বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা দেয়। কিছু কিছু সময়ে এসব পরিবর্তন বেখেয়ালি বা ক্লামজি বোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বিষয়ে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডাঃ সামিয়া আফরিন গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়ার ৫টি কারণ বলেছেন।
মাথা ঘুরানো: গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো খুবই সাধারন একটি উপসর্গ। কখনো কখনো গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানোর কারণে ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়া ও বেখায়ালি হওয়ার প্রবনতার সম্ভাবনা থাকে।

শারীরিক পরিবর্তন: গর্ভকালীন সময়ে হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে একটি হাড়ের সাথে অন্য আরেকটি হাড় সংযোগকারী লিগামেন্ট (Ligament) ঢিলা হয়ে যায়,। যার ফলে হাড়গুলোর জয়েন্টের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এসময়ে মানবদেহে পানি জমে হাত-পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলো কারণেও আমাদের শরীরের ভারসাম্যতা ধরে রাখতে বেশ কষ্ট হতে পারে।

দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু সময়ে চোখের দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন আসার ফলেও অসাবধানতাবশত আপনি হোচট খেয়ে পড়ে যেতে পারেন।

অতিরিক্ত ওজন: গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ওজন অনেকেই নিয়ন্ত্রন করে পারে না। যার ফলে এই অতিরিক্ত ওজন আপনার জন্য বেশ ক্লান্তিদায়ক হতে পারে। আবার এসময়ে আপনার পেট ও স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আপনি আপনার শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে কষ্টসাধ্য হতে পারে। কখনো কখনো পেটের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার কারণে হাঁটার সময় পা দেখতে পায় না। যার ফলে অসাবধানতাবশত হোচট খাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

ভুলোমনা হয়ে যাওয়া: গর্ভকালীন সময়ে ভুলে যাওয়ার প্রবনতা প্রায় সকলেই দেখা যায়। বলা চলে এ সময়ে এটি একটি সাধারন উপসর্গ। কোন জায়গায় কোন জিনিস আছে বা কোথায় কি রেখেছেন তা মনে করতে না পারার কারণেও অনেকসময় গর্ভবতী মহিলা বেখেয়ালি হয়ে যায়।

এগুলো ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনের মান ও অন্যান্য রোগের কারণেও গর্ভাবস্থার এই বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা নির্ভর করে। যেমন- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, অত্যাধিক দুশ্চিন্তা, অলস জীবনযাত্রা, অতিরিক্ত বমি বমিভাব এগুলোর কারণেও বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা এবং হোচট খাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আশা করছি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন, গর্ভাবস্থায় ভারসাম্য হারানো সমস্যার প্রতিরোধে করণীয় কি সে বিষয়ে জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় ভারসাম্য হারানো সমস্যার প্রতিরোধে করণীয়

গর্ভকালীন সময়ে হঠাৎ ভারসাম্য হারানোর ব্যপারটা কারণগুলো দেখা পরে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আপনি যদি কিছু ঘরোয়া সমাধান মেনে চলে সাবধানতা বজায় রাখেন তাহলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাই এড়িয়ে চলা আপনার পক্ষে সম্ভব হবে।

প্রতিদিনের কাজ ধীরেসুস্থে করা: গর্ভকালীন সময়ে আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে যে আপনার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে, এটা বুঝতে পারলেই আপনি দৈনন্দিন কাজ ধীরেসুস্থে করার চেষ্টা করুন। হাঁটা চলার সময় অবশ্যই খেয়াল করুন, আপনি যে পথে হাটছেন সেই পথে উচু-নিচু বা পিছলে হয়ে আছে কি না।
আবার আপনার হাতে কোনো কিছু থাকলে (ভারি কিছু বহন না করাই উত্তম) থাকলে সেটি খেয়াল করতে হবে। অতিরিক্ত তাড়াহুড়া করে চলাফেরা করলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই গর্ভকালীন সময়ে দেখে শুনে ও জেনে বুঝে ধীরেসুস্থে চলাচল করার চেষ্টা করতে হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এড়িয়ে চলা: ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বলতে চেয়ার বা টেবিলের ওপর উঠে কোনো কাজ করা, মই বেয়ে ওঠা কোনো কাজ করা, সামনে পড়ে যাওয়ার ঝুকি আছে জেনেও সেই পথে চলাফেরা করা ইত্যাদি এসব কাজ দুর্ঘটনা প্রবনতার সম্ভাবনা বেশি বাড়িয়ে দেয়।

এজন্য গর্ভাবস্থার এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এ ধরনের কাজের প্রয়োজন পড়লে সেই কাজটি আপনি না করে চেষ্টা করুন অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া। এইটাই আপনার জন্য উত্তম হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বেশি সাবধান থাকা: কিছু কিছু পরিস্থিতি রয়েছে (যেমন- অন্ধকার অথবা কম আলোর রাস্তায় চলাচল করা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করা) সেগুলো পরিস্থিতিতে ঝুঁকি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই সেই পরিস্থিতিতে বেশি সাবধানতা বজায় রেখে চলাচল করতে হবে।

আপনি নিচে নামার সময় সবসময় রেলিং ধরে ওঠা-নামা করুন এবং কম আলোর রাস্তায় চলাচল না করা। এছড়াও আপনি যদি আগে অতিরিক্ত ব্যায়াম করা ও খেলাধুলায় অভ্যস্ত থাকেন, তাহলে গর্ভকালীন সময়টাতে ঝুঁকিপূর্ন এসব কার্যক্রম কমিয়ে দিতে হবে।

গর্ভাবস্থার হালকা ব্যায়াম করা: গর্ভকালীন সময়ে শারীরিক ব্যায়াম করাটা পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। গর্ভকালীন সময়ের আপনার উপযোগী হালকা পাতলা ব্যায়াম করলে আপনার মাংসপেশি শক্ত হওয়ার পাশাপাশি ভারসাম্য রক্ষা করাতেও সহায়তা করবে। এ সময়ে চাইলে আপনি হালকা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।

কোমড়ে বেল্ট ব্যবহার করা: ভারসাম্য রক্ষার জন্য মাতৃত্ব সমর্থন (Maternity support) বেল্ট ব্যবহার করা একটি কার্যকরী উপায় হতে পারে। এটি গর্ভকালীন সময়ে হোচট খেয়ে বা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মাতৃত্ব সমর্থন বেল্ট আপনি যেকোনো ফার্মেসি কিংবা বড় সুপার শপ গুলোতে পেয়ে যাবেন।

আরামদায়ক জুতা ব্যবহার করা: বেশিরভাগ নারীদেরকে হাই হিল বা জুতা পরতে দেখতে পাওয়া যায়। গর্ভকালীন সময়ে তাদের উচিত এসব হাই হিল অথবা পা মোচড়ে যেতে পারে এমন ধরনের হিল পরা থেকে বিরত থাকা। কেননা এগুলো হাটাচলা করতে অসুবিধা হওয়ার পাশাপাশি পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই এসময়ে আপনারা এমন ধরনের জুতা বেছে নিন যেগুলোতে হাটাচলা করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া: গর্ভকালীন সময়ে ক্লান্তি কমানোর জন্যে রাতে সময়মতো ঘুমিয়ে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তলুন। এমনকি দিনের বেলায় প্রয়োজন অনুযায়ী সময় সুযোগ পেলেই বিশ্রাম নিন। এটি ক্লান্ত থাকার কারণে তৈরি হওয়া বেখেয়ালি বোধ অনেকটাই কমাতে সহায়তা করবে।

নিয়মিত পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করা: গর্ভকালীন সময়ে অনেকেরই পায়ের গোড়ালির ফুলে যাওয়ার  সমস্যা তৈরি হয় একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। এটি গোড়ালি ফুলে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে। পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করার সঠিক নিয়ম হচ্ছে প্রথমে পায়ের গোড়ালি ভাঁজ করে আবার সোজা করতে হবে। একবার ওপরের দিকে ভাঁজ করতে হবে, পরে আবার নিচের দিকে ভাঁজ করতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ বার করতে হবে।

সম্ভাব্য রোগের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া: আপনার যদি কার্পাল টানেল সিনড্রোম (Carpal tunnel syndrome)’ অথবা অন্য কোনো রোগের কারণে আপনি বেখেয়ালি হচ্ছেন বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবেই চিকিৎসক আপনার রোগ মোতাবেক উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারবেন।

ভারসাম্য হারালে কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত

আপনারা হয়তো এতক্ষনে জেনেছেন গর্ভকালীন সময়ে বেখেয়ালি হয়ে যাওয়াটা সাধারন উপসর্গ। শুধুমাত্র এই উপসর্গের কারণে দুশ্চিন্তা করার কারণ নাই। তবে যদি কখনো কখনো বেখেয়ালি হওয়ার সময়ে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যেগুলো অন্য কোনো রোগের কারণ হতে পারে। নিচের ৫টি লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দিলে গর্ভবতী নারীকে বেশি দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • অত্যাধিক মাথাব্যথা করলে
  • বমি হওয়া 
  • পাঁজরের হাড়ের নিচে তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া
  • শরীরের গোড়ালি, মুখ ও হাত এবং পায়ের পাতা হঠাৎ ফুলে যাওয়া।
  • চোখের দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া কিংবা চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি।
এগুলো প্রি-এক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারে। প্রি-এক্লাম্পসিয়া অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা। এটি গর্ভকালীন সময়ের অনেক জরুরি একটি অবস্থা। তাই এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পড়ে গেলে কি শিশুর ক্ষতি হবে?

অন্যান্য সময়ের চেয়ে গর্ভকালীন সময়ে পড়ে গেলে ব্যথা পাবার প্রবনতা অনেক বেশি থাকে। এতে গর্ভবতী নারী ও গর্ভস্থ শিশু উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার ঝুকি থাকে। হাড়ের জয়েন্ট ও মাংসপেশিতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও দেহের অভ্যন্তরীণ রক্তপাত থেকে শুরু করে মাথায় আঘাত পাওয়া এসব প্রসব সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য চিকিৎসকরা বলেন গর্ভকালীন সময়ে পড়ে যাওয়া থেকে সাবধান থাকাটা অনেক জরুরি।

প্রসবের পর কখন ভারসাম্য আগের মতো হবে?

গর্ভাবস্থায় প্রায় প্রতিটা নারীই একটি সাধারন প্রশ্ন করে থাকেন বা তাদের মধ্যে প্রশ্নটি জাগে সেটি হচ্ছে সন্তান প্রসবের পর কখন ভারসাম্য আগের মতো হবে? এর উত্তর হচ্ছে, আপনার ভারসাম্যতা আগের মতো ফিতে পেতে অর্থাৎ স্বাভাবিক হতে সন্তান প্রসবের পর কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ভারসাম্য স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ওপরের উল্লিখিত প্রতিরোধের উপায়গুলো অনুযায়ী সাবধান থাকার অনুরোধ রইলো। ততদিন পর্যন্ত সাবধান থাকাটা জরুরি। আশা করছি, এই সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য

গর্ভাবস্থায় একটু অসচেতন হওয়ার ফলে গুরুতর কোনো কিছু দেখা দিলে অবশ্যই আপনার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রিয় পাঠক, আপনারা হয়তো এতক্ষণে বর্তমানে গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা ও সমস্যা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।

আপনি যদি সম্পূর্ণ পোষ্টের কোনো অংশ বুঝতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। তাহলে, আমরা আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাকে সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আবার যদি এই বিষয়ে আপনাদের মাঝে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

গর্ভাবস্থায় হঠাৎ বেখেয়ালি হওয়ার প্রবণতা ও সমস্যা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আমাদের আজকের ব্লগটি আপনার ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের শেয়ার করবেন। এতে যারা উল্লিখিত বিষয়গুলো জানেন না তারাও এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানতে পারবেন। এরকম স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত টিপস পেতে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পোষ্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url